Thursday, August 30, 2018

গল্প- বাসর, পার্ট-০১


.
.
.
খুব লজ্জা লাগছে আজ। আমার বাসর হবে। আমার ওনার কিছু বোন আমাকে রুমে এনে বসিয়ে রাখলো সেই এক ঘন্টা ধরে। কিন্তু আমার ওনার কোন খবর নেই।বসে আছি লেহেঙ্গাটা গোল করে বিছানায় সাজানো রয়েছে অনেকক্ষণ। আর ভালো লাগছে না বসে থাকতে উঠে দাড়ালাম। হেটে বারান্দার দিকে গেলাম। বারান্দার চেয়ারটাতে একটু বসলাম। চোখটা একটু লেগে গেছিলো হঠাৎ দরজাটা নড়ে উঠলো আর আমার বুকটাও মোচড় দিয়ে উঠে মনে হয় জিহান আসছে।আমি তাড়াতাড়ি চেয়ার থেকে উঠে রুমের দিকে গেলাম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত তখন ৩:৫০মিনিট। বাইরে আলো উঠে গেছে হালকা। প্রিতির অভিমান হচ্ছে তার বাসরের দিন তো শেষ তাহলে তাও কিছু বললোনা। জিহান ধাপ করে বিছানায় পড়ে গেলো। প্রিতির বুঝতে বাকি নেয় যে সে নেশা করেছে।
প্রিতি: আপনি নেশা করেন??
জিহান: কেন ম*গি তোরে বলেনাই কেউ??
প্রিতি: না। আজকে আমাদের বাসর ছিলো।
জিহান: এইসব আদিক্ষেতা আমি জানিনা। বাসর করবি,তাই না?? চল তাহলে আমরা বাসর করি।
( জিহান একটা বাজে গান দিলো )
জিহান: এইবার নাচ তুই আমি দেখি। নাচ নাচ এই বলে একটা সিগারেট ধরালো
প্রিতি: এই আপনি কি বলছেন?? আমি নাচবো আর এই গানে??
জিহান: চুপ!! আরেকটা কথা না।। তোরে কে বলছে আমাকে বিয়ে করতে?? আমাকে দেখছিলি তুই?? তোরেও আমি দেখিনাই।। যাহ এখান থেকে।। ঘৃনা করি আমিমি মেয়েদের।।
প্রিতি: তো আপনি করছেন কেন আমাকে বিয়ে?? আপনি ওতো বিয়েটা আটকাতে পারতেন।।
জিহান: তোরে কষ্ট দিতে।। তুই একটা মেয়ে তাই তোরে কষ্ট দিবো।।
( জিহান প্রিতির বালিশটা মাটিতে ফেলে দিলো।। ওইখানে ঘুমা আর একটা কথা আমার সাথে বলবি না। এই বলে জিহান মুখ ফিরিয়ে শুয়ে পড়লো।। আর প্রিতি মাটিতে বসে গেলো।। কত সপ্ন ছিলো তার বিয়ে নিয়ে বাসর নিয়ে।। সব এক নিমিসে শেষ হয়ে গেলো। প্রিতি তো বেশি কিছু চাই নি জীবনে। সে তো একটা ভাল পরিবার চেয়েছে এইটা কি তার ভুল। সব মেয়ের একটা সপ্ন থাকে বিয়ে নিয়ে তাহলে কি আমার সপ্নটা শেষ হয়ে গেলো। তার চোখ দিয়ে পানি পড়তেই আছে। সে আর ঘুমালো না তার বাসরে।। )
প্রিতি একজন গরিব ঘরের মেয়ে। তার বাবা কেবল একটা গ্রামের স্কুলের একজন সহকারি শিক্ষক। যেমনে পারে তারা কষ্ট করে তাদের সংসার চালাই। অনেক আসা নিয়ে প্রিতিকে বিয়ে দিয়েছিলো এক বড় কোম্পানির মালিকের ছেলের সাথে। প্রিতি খুবই সুন্দরী ছিলো তার আচার আচরণ ছিলো তার চেয়ে আরো সুন্দর।। সে অনেক গুনের অধিকারী।। জিহানের মা তার এক মামাতো ভাইয়ের বাসাই প্রিতিকে দেখে আর তার ছেলের জন্য তাকেই পছন্দ করে।। এমন ঘরে কন্যা বিয়ে দেওয়ার খুশিতে প্রিতির বাবা যেন আত্তহারা হয়ে গেছে। কোন কিছু নআ দেখে প্রিতির জন্য হ্যা করে দিলো। বাবার এমন হাসি মাখা মুখ দেখে প্রিতিও অমত করেনি। সেও রাজি হয়ে গেছে। ১০ জানুয়ারি তাদের বিয়েটা সম্পন্ন হলো। এইদিনটা ছিলো প্রিতির জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন কিন্তু মনে হচ্ছে এইদিনটাই তার জীবনের এক অভিশাপ্ত দিন। তার বাসর যে বাসরঘর কিনা লাল ফুল দিয়ে সাজানো সে ঘরে প্রিতি লাল রক্ত দেখতে পাচ্ছে। তার রক্ত তার সপ্নের। যে সপ্নকে খুন করেছে আজ জিহান।। সে রাত জেগে কান্না করলো। )
জিহান সকালে প্রিতির মুখে একগ্লাস পানি ছোড়ে মারলো। প্রিতি চমকে উঠলো হটাৎ।
প্রিতি: কি সমস্যা আপনার?? ঘুমালেও প্রব্লেম আপনার?? ঘুমানো কি যাবে না??
জিহান: রাগ কাকে দেখাচ্ছিস?? বাড়ির বাইরে বের করে দিবো আরেকটা কথা বললে। বাথরুমের দরজাই ঘুমাইলে কি আমিমি তোর মাথার উপর দিয়ে যাবো?? সরে বস হারামজাদি।।
প্রিতি: সরি।। বলে উঠে গেলো প্রিতি। চোখের পানিতে তার কাজলগুলা ছড়াই গেছে একদম।। জিহান বাথরুম থেকে আসা পর্যন্ত প্রিতি টিস্যু দিয়ে চোখের কাজল ঠিক করছিলো। আধঘণ্টা হয়ে গেছে এখনও আসছে না আপদটা।। মরে টরে গেলো নাকি আবার।। প্রিতি দরজাই ধাক্কা দিতে গেলো সাথে সাথে জিহান দরজা খুললো আর প্রিতি গিয়ে জিহানের গায়ে পড়লো।। প্রিতি জিহানের হাতে।। চোখ ২টা একসাথে তাদের।। জিহান তাকিয়ে আছে প্রিতির দিকে আর ভাবছে এতো সুন্দর তার চোখগুলা।। প্রিতি যেন জিহানের চোখে ডুবে গেলো আর বলে কই তার চোখে কত মায়া এই মানুষটা কেন এমন করছে আমারর সাথে। তাকে কাছ থেকে দেখলে তো লাগেনা যে সে এমন খারাপ মানুষ। মনে হচ্ছে সে যেন এক ফেরেশতা।।
সাফা ( জিহানের ছোট বোন ): ভাবি ঘুম ভেগেছে।। আহহ!! আমি কিছু দেখিনি।। বলে চোখে হাত দিয়ে দিছে।।
(তার কথায় আমরা নড়ে দারালাম জিহান একপ্রকার ঠেলা মারলো আমাকে।)
প্রিতি: হে ভেগেছে।। এসো ভিতরে এসো।
সাফা: সরি। আসলে আমার এইভাবে আসাটা ঠিক হইনি।।
প্রিতি:না না। তেমন কিছুনা।
সাফা:নাও এই শাড়িটা পরে নিচে আসো আম্মা দিয়েছে।।
প্রিতি : আচ্ছা।। ( লাল রঙের উপর সাদা সুতার কাজ করা)
প্রিতি শাড়িটা পড়ে বের হললো বাথরুম থেকে তাকে খুব সুন্দর লাগছে। প্রিতির গায়ের রঙ এমনেতেই সাদা তার উপর এই রঙের শাড়ি দারুণ মানিয়েছে তাকে। জিহান বিছানাই বসে সিগারেট খাচ্ছিলো প্রিতিকে দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো।।
জিহান: এই এদিকে শুন। আমার পা টিপে দে।।।
প্রিতির এমন রাগ লাগছিলো যে পাশের টেবিলে থাকা পানির গ্লাসটা নিয়ে দিলো জিহানের মুখে পানিগুলা আর রুম থেকে বের হয়ে গেলো ।।
জিহান তো আগুন হয়ে আছে।।
( চলবে)
গল্পটা তানভীর ভাইয়ের লেখা।গল্পটা ভাল লাগছে তাই পোস্ট করলাম।পড়ার ইচ্ছা থাকলে পড়তে পারেন।

No comments:

Post a Comment