Monday, September 10, 2018

অলৌকিক প্রেম,পার্ট-০৪



জেরিনের কোলে মাথা রেখে রোমান্টিক
সময় কাটাচ্ছিলাম, হঠাৎ কেউ আমাকে
উদ্দেশ্য করে বললো:
--কার সাথে কথা বলছো একা একা?"
.
চমকে উঠে বসলাম আমি জেরিনের কোল
থেকে। পেছনে ফিরে দেখলাম ছোট ভাবী
দাঁড়িয়ে আছে। ভাবী আবার বললো:
--এতো রাতে এখানে কি? আর কার সাথে
কথা বলছো একা একা?"
আমি একবার ভাবীর দিকে তাকালাম
আরেকবার জেরিনের দিকে। জেরিন হেসে
বললো:
--ভাবী আমাকে দেখছেনা।"
ভাবী এবার কিছুটা আওয়াজ বাড়িয়ে বললো:
--কি হলো? কথা বলছো না কেন? আর
ওদিকে এভাবে কি দেখছো? সবাই তোমার
জন্য খাবার টেবিলে অপেক্ষা করতেছে, আর
তুমি এখানে একা একা পাগলামি করতেছতুমি এখানে একা একা পাগলামি করতেছো?"
--একা না ভাবী, আমি ওর সাথে...." কথাটি
বলার সময় জেরিন আমাকে মাথা নেড়ে বাঁধা
দিলো ওর কথা না বলার জন্য। তাই আমি
প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বললাম:
--তুমি যাও ভাবী, আমি আসতেছি......"
.
.
ভাবী চলে যাওয়ার পর আমি উঠে।দাঁড়ালাম,
জেরিন আমার হাত ধরে বললো:
--যাওয়ার আগে একবার "ভালোবাসি" বলে
যাও......
--অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায়
জেরিন......"
আমার কথা শেষ হতেই জেরিনের চোখ বেয়ে
টুপ করে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো।
আমি বললাম:
--জেরিন, তোমার চোখের জলের দাম
সেদিন যারা দেয়নি, তাদের আমি বিনাশ
দেখতে চাই......"
--এখনো সময় হয়নি...... সময় হোক।আগে।
যাও তুমি এখন, সবাই তোমার জন্য খাবার
নিয়ে বসে আছে, আমার তো এখন খেতে
হয়না, ঘুমাতে হয়না।
--রাতে রুমে এসো, সেই আগের মতো
তোমাকে নিয়ে ঘুমাবো আমি।
--সেই আমি কি আর এই আমি?
--তবুও এসো......
--আচ্ছা...... "
.
আমি বাসার দিকে হাটতে লাগলাম। জেরিন
কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো আমার দিকে।
তারপর মিলিয়ে গেল।
.
.
খাবার টেবিলে সবাই একসাথে খেতে বসলাম।
তখন বাবা আমার বিয়ের প্রসঙ্গ তুললোতখন বাবা আমার বিয়ের প্রসঙ্গ তুললো।
বড় দুই ভাইয়াও বাবার সাথে তাল মিলিয়ে
বলল এবার আমাকে বিয়ে করিয়েই ছাড়বে।
আমি রাজি না হয়ে বললাম:
--এসব বিয়েসাদী আমার দ্বারা হবেনা। আমি
এখন ভালো আছি।"
বাবা বললো:
--তা হবেনা। আমি আমার ছোট ছেলেকে বিয়ে
না করিয়ে শান্তি পাবো না। আর কোনো
কথা হবেনা এ নিয়ে। কাল রেডি থাকবে পাত্রী
দেখতে যাওয়ার জন্য।" বলেই বাবা খাওয়া
শেষ করে হাত মুছে উঠে দাঁড়ালো। আমি হা
করে চেয়ে রইলাম। মাকে বললাম:
--মা আমাকে জোর করে তোমরা বিয়ে
করাতে পারোনা তোমরা......"
মা বললো:
--এবার তোকে বিয়ে করিয়েই ছাড়বো......"
মায়ের কথার সাথে সুর মেলালো সবাই।
আমি রেগে উঠে বললাম:
--তোমাদের যা খুশি তাই করো।" বলেই আমি
উঠে চলে গেলাম নিজের রুমে।
.
.
বেডে শুয়ে মাথায় হাত দিয়ে ভাবছিলাম বিয়েটা
কেমনে আটকানো যায়। তখনই জেরিনের
কণ্ঠ শুনতে পেলাম:
--মন খারাপ?
--হুমম..... সবাই উঠেপড়ে লেগেছে আমার
বিয়ে দেয়ার জন্য।
--তো বিয়ে করে ফেলো?
--বিয়ে করে ফেললে তোমাকে ভুলে যেতে
হবে, আমি চাইনা তোমাকে ভুলে যেতে, আমি
সারাজীবন তোমার স্মৃতি আঁকড়ে ধরে
বাঁচতে চাই।
--তা হয়না রানা। আমি তোমার অতীত। আমি
মিথ্যে। বাস্তবতা নিয়ে একটু ভাবো।
--তারপর?
--তারপর কি? তুমি সংসার করবে, একদিন
তুমি বাবা হবে......
--আর তুমি?
--আমি? আমি মিশে যাবে আড়ালে। ওপার
থেকে উকি দিয়ে দেখবো আমার রানা সংসারী
হয়ে গেছে, অথচ একদিন তার সাথে আমি
সংসার করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। নিয়তি
সবকিছু শেষ করে দিয়েছে।
--এভাবে বলে আমার কষ্টটা আর বাড়িয়ে
দিওনা।"
জেরিন জোর করে ঠোটে একটা হাসির রেখা
টেনে আমার গাল টেনে দিলো। তারপর
বললো:
--কাল তাহলে পাত্রী দেখতে যাচ্ছ?
--যাবো?
--হুমম....
--তুমি বলছো?
--হুমম...এভাবে নিজের জীবনকে শেষ করে
দিতে পারোনা তুমি..."
--বেশ, তুমি যখন বলছো কাল যাবো পাত্রী
দেখতে....."
--এখন চুপ করে ঘুমাও......আমি তোমার
মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।"
--ওকে.... " বলে আমি চোখ বুজলাম। মাথায়
জেরিন আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে
লাগলো। একসময় আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
.
পরদিন পাত্রী দেখতে গেলাম আমরা একটা
বাসায়। পাত্রীর ফ্যামিলি স্ট্যাটাস বাসায়। পাত্রীর ফ্যামিলি স্ট্যাটাস ভালো,
বাবা ডাক্তার, মা ব্যাংকার, আর পাত্রী
নিজে মেডিকেল স্টুডেন্ট, নাম মিম।
আমাদের বাসার সবার পছন্দ হয়েছে মিমকে।
তাই বিয়ের দিনতারিখ ঠিক করে ফেললো।
সন্ধ্যার পেরিয়ে গেল,, আমরা মিমদের বাসা
থেকে বের হলাম খেয়েদেয়ে। চাদেঁর আলো
ছিল বাইরে। চারপাশের সবকিছু স্পষ্ট দেখা
যাচ্ছে। গাড়িতে যখন উঠতে যাবো তখন
কিছুটা দূরে চোখ গেল আমার। চাদেঁর
আলোয় স্পষ্ট দেখলাম জেরিন দূর
একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এদিকে....
.

No comments:

Post a Comment