Thursday, August 30, 2018

রোমান্টিক ভালবাসার গল্প Gangster-2 পার্ট-০৩ শেষ পর্ব


.
.
.
--মা আমি তোমাকে ছাড়া কোথাও যাবো না প্লিজ মা ওদের কে বল প্লিজ।(আবির)
আবিরের মা কোন কথাই বলতে পারছেনা যেন উনি বোবা হয়ে গেছেন।
--আবির আমি ১০ পর্যন্ত গুনবো এর মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে আমরা গুলি ছুরতে বাধ্য হবো। (মাহতাব)
১০ পর্যন্ত গুনার পরও যখন আবির আত্মসমর্পণ করলো না তখন পুলিশ বাড়ির চারিদিক থেকে গুলি ছুরতে থাকে।
হঠাৎ একটা গুলি এসে তার মায়ের বুকে লেগে যায়।সঙ্গে সঙ্গে আবিরের মা মারা যায়।
--মা তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না মা।(চিৎকারের সাথে বলতে লাগলো)
আবিরের মায়ের মৃত্যুর পর আবির সেখানে অজ্ঞান হয়ে যায়।কিছুক্ষন পর পুলিশ বাসার মধ্যে ঢুকে আবিরকে গ্রাপ্তার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।আর আবিরের মাকে দাফন করা হয়।মাহতাব সাহেব পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে জানায় যে আবিরের মাও আবিরে র কাজে সঙ্গ দিয়েছিল।
২দিন পর যখন আবিরের জ্ঞান ফিরল সে বুঝতে পারলো যে সে এখন পুলিশের হেফাজতে।
আবিরকে শিকল দিয়ে বেধে রাখা হয়েছিল যাতে সে ছুটতে না পারে।
আবির ছোটার জন্য অনেকটা চেস্টা করলো। কিন্তু ছুটতে পারলো। আবিরের জ্ঞান ফিরেছে বলে মাহতাব সাহেব আবিরের কাছে আসলো।
--শান্ত হও তুমি এখন পুলিশের হেফাজতে। তোমার পক্ষে এখন নিজের ইচ্ছা মতো চলা অসম্ভব। (মাহতাব)।
আবিরকে থানায় নিয়ে আশা হল।
--অনেক অপরাধ করেও থানায় আসিস নি আজ কিন্তু তোকে আসতে হয়েছে। থানার তোকে যা লাগছেনা হেব্বি। (মাহতাব)
আবির রেগে গিয়ে মাহতাব সাহেব এর শার্টের কলারটা চেপে ধরলো।
--খুব হাসি পাচ্ছে না তোর?তোর এই হাসি আমি নিমিষেই শেষ করে দিতে পারি। (আবির)
--কিভাবে?আমার পরিবারকে ধরে আমাকে ব্লাকমেইল করবি?সে সুযোগ তো আর পাচ্ছিস না তুই?(মাহতাব সাহেব কথাটা খুব জোরের সাথে বলল)
--আমি যানি তোকে বা তোর গ্যাংকে ধরলে তুই আবার আমার পরিবারকে ধরে আনবি আর ব্লাকমেইল করবি সেটা ভেবেই আমি আমার পরিবারকে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে দিয়েছি।(মাহতাব)
--কি ভাবলি আমি এতোটাই বোকা যে তোর পরিবার কে বার বার ধরে এনে তোকে ব্লাকমেইল করবো? না.. না..এবার আমি তোর সামনে তোর পরিবারকে এক এক করে মারবো।শুধু তোর মেয়েকে নীলাদ্রিকে
ছেড়ে দেব কারন তাকে আমি ভালবাসি।(আবির)।.
---হা হা হা আমার পরিবারকে পাবি কোথায় তুই?(মাহতাব)
--আমার অজান্তে কেউ কিছু করবে আর আমি বুঝতেই পারবো না এটা ভাবলি কি করে?(আবির)
--মা...নে মানে কি বলতে চাস তুই?(আমতা আমতা করে কথা বলছেন মাহতাব সাহেব)
--মানে হলে এটাই যে তোর পরিবারকে থাইল্যান্ড থেকে আমার লোকেরা এতক্ষণে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে।(আবির)
--আমাকে বোকা পেয়েছিস যে তুই বললি আর আমি তোকে ছেড়ে দেব?(মাহতাব)।
--ভয় নেই কিছুক্ষণ পরেই তোর ফোনে ফোন আসবে।(বলতে বলতেই মাহতাব সাহেবের ফোনে ফোন এলো।)
--হেলো কে বলছেন?(মাহতাব)
--আবির ভাইকে সাথে নিয়ে ******** এখানে চলে আসেন।(সিয়াম)
--কে বলছেন?
ফোনটা কেটে দিলো।
--কি কথা হলো? (আবির)
--তুমি জানলে কি করে?(মাহতাব)
--সহজ প্রশ্ন সহজ উত্তর। আমি অনেক আগেই জানতান যে তুই একদিননা একদিননা আমাকে গ্রাপ্তার করবি।তাই এই প্লানটা অনেক আগেই বানিয়ে রেখেছিলাম।আমাকে থানায় আনলেই এই প্লান মতো আমার ছেলেরা কাজ শুরু করে দিবে।(আবির)
মাহতাব সাহেব আবিরের কথা বিশ্বাস না করে নিজের স্ত্রীর কাছে ফোন দিতে গেল।
--হেলো তুমি কোথায়?(মাহতাব)
--আমাদের কে বাঁচাও প্লিজ।আমাদেরকে আবিরের ছেলেরা ধরে নিয়ে এসেছে।(মাহতাব এর স্ত্রী)
মাহতাবের স্ত্রীর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নিও সিয়াম।
--আপনাকে যা বলেছি তাই করেন নইলে আপনার পরিবারের কেউ বাঁঁচবেনা বলে দিলাম।(সিয়াম)
--আমি এখনি আসছি।(মাহতাব)
অতপর মাহতাব সাহেব আবিরকে সঙ্গে নিয়ে সিয়ামের দেয়া ঠিকানায় চলে গেলেন।
--এসেছেন তাহলে?আর একটু দেরি করলেই তো........(সিয়াম)
--আমি আবিরকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি এখনতো আমার পরিবারকে ছেড়ে দাও প্লিজ।আমি আর কোন দিন আবির ভাইয়ের কাজে বাধা হয়ে দাড়াবো না।আপনারা বললে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাবো। (মাহতাব)
--এই শহর নয় এই পৃথিবী থেকে।(কথা বলেই আবির সিয়ামের হাত থেকে বন্দুকটি নিয়ে মাহতাব সাহেব এর বুকে ছয়টা গুলি করে দিল।)।
মাহতাব এর পরিবার তার লাশের পাশে এসে কান্না বাধিয়ে দিল।
আবির এবং তার দল বল সেখান থেকে বিদায় নিল।
কিছুদিন পর হঠাৎ নীলাদ্রি আবিরের সাথে দেখা করার জন্য আবিরের বাসায় আসে।
--কিছু বলতে এসেছ?(আবির)
--হুম(নীলাদ্রি)
--বল কি বলবে?
--আমাকে বিয়ে করবেন?
--তুমি কি বলছ মাথা ঠিক আছে?
--হুম।আপনি না আমাকে ভালবাসতেন আমাকে বিয়ে করতে চাইতেন এখন বিয়ে করবেন না?না কি এখন আমাকে ভালবাসেন না?
--তোমাকে ভালবেসেছি সারা জীবন বেসেই যাবো।তুমিতো তখব আমাকে ভালবাসতে না। কিন্তু হঠাৎ করে তোমার এমন কথা আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা তাই আরকি।
--আমাকে বিয়ে করবেন কিনা সেটা বলেন?
--অবশ্যই বিয়ে করবো।।
অতপত নীলাদ্রির মায়ের সম্মতিতে বিয়ের কাজ সম্পুর্ণ হলো।
আজ আবির আর নীলাদ্রির বাসর রাত।
নীলাদ্রি ঘাটের উপর বসে ছিল আবির দেখে ঘাট থেকে নেমে এসে আবিরকে সালাম করতে গেল কিন্তু আবির তাকে বাধা দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো।
তারপর আবির নীলাদ্রিকে ঘাটের উপর বসালো।
--আমি ভাবতেই পারছিনা যে আমি তোমাকে আমার বউ হিসাবে পেয়েছি তাও আবার তোমার নিজের সম্মতিতে।(আবির)
--আপনি আরও অনেক কিছুই ভাবতে পারবেন না।(নীলাদ্রি)
--মানে?
--মানে হলো আপনি যেহেতু আমার স্বামী আমার তো অনেক কর্তব্য। সে কর্তব্য পালন করলে আপনি আরও অবাক হবেন।
--ওহ তাই বল
আবির নীলাদ্রির ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো। নীলাদ্রিকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।যেন নীলাদ্রি তাকে ছেড়ে কোথাও যেতে না পারে।আবির হঠাৎ তার পেটে ব্যাথা অনুভব করতে লাগলো। আবির বুঝতে পারছে তার আয়ু খুব কম তার এখন যেতে হবে।কারন নীলাদ্রি তার পেটে ছুরি বিদিয়ে দিয়েছে।
--কেমন লাগছে এখন মিস্টার আবির?
--তুমি এমনটা কেন করলে?
--কেন করলাম বুঝতে পারছেন না?কোন মেয়ের সামনে তার বাবাকে যদি মেরে ফেলা হয় তাহলে সেই মেয়ের অবস্তা কেমন হয় বলেন শুনি?আপনি কি করে বুঝবেন মা-বাবার কষ্ট। আপনারতো বাবা-মাই নেই।আপনি যানেন যেই দিন আমার মায়ের চোখের সামনে আমার বাবাকে আপনি মেরে ফেললেন সে দিন আপনারা আসার পর আমার মা সেখানেই আত্মহত্যা করে।আমি আমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিলাম।
--বাহ বাহ একবার জানতেও চাইলেনা আমি তোমার বাবাকে কেন মারছি।
--কি জন্য আর আপনাকে উচিত শাস্তি দিতে চায় বলে।
--নাহ নাহ।তুমি যেই রকম তোমার মা-বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিলে তেমনি আমি আমার মাতের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিলাম।আমিতো তোমার বাবাকে মেরেছি কিন্তু তাকে কোন অপবাদ দেইনি।তোমার বাবা আমার মাকে মেরে তার নামে মিথ্যে অপবাদ দিয়েছে।কি ক্ষতি করেছিলেন আমার মা তোমার বাবাকে?
নীলাদ্রি ব্যপারটা বুঝতে পারলো এটাও বুঝতে পারলো আবিরকে আঘাত করা ঠিক হয়নি।
--সরি আবির আমি বুঝতে পারিনি।আমি তোমাকে বাঁচাবো আবির আমি তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবো।
--হা হা হা অনেক দেরি হয়ে গেছে নীলাদ্রি আমার সময় শেষ আজ আমার পাপের সমাপ্তি ঘটলো। আমাকে তোমার বুকে একটু জড়িয়ে ধরবে প্লিজ?আমার এই শেষ ইচ্ছাটা একটু পুরন কর।
নীলাদ্রি আবিরকে তার বুকে জড়িয়ে নিলো ঠিক তার ২সেকেন্ড পর আবির মারা গেল।
-------------------------------সমাপ্তি----------------------------------
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।পরের গল্প পড়ার জন্য অপেক্ষা করুন।

No comments:

Post a Comment