Saturday, September 1, 2018

[Real Love Story] কাউকে সত্যি সত্যি যদি ভালোবাসেন আপনি তাকে পাবেনই একদিন।




আম্মুর কথামত বাজার করতে যাচ্ছি। বাগ টা হাতে নিয়ে চলে আসলাম বাজারে। মাছ কিনতে গিয়ে।
আমি: আঙ্কেল ঐ মাছটা কত
পাশে থেকে খুব চেনা মেয়েলি কন্ঠে কে যেন বলে উঠলো
"মাছটা আমি নিব"

আমি তার দিকে তাকিয়ে আমার বুকের ভেতর মোচর দিয়ে উঠলো। সেই পরিচিত মুখ। তিন বছর পরে দেখা আজ। কিন্তু প্রেরনা যে কেন আমাকে ছেড়ে গেল সেটা রহস্যের আড়ালেই থেকে গেল। কি ঘটেছিল তিন বছর আগে ফিরে দেখা যাক।

আমার নাম রুপম।তিন বছর আগে আমি যখন রাজশাহী বিশ্বদ্যালয়ে চান্স পায়। ১ম দিন ভার্সিটিতে গিয়ে বসে আছি। যেহেতু আমার বাড়ির পাশে রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয় তাই আমি প্রায় সবকিছুই চিনি। হঠাৎ কেউ মেয়েলি কন্ঠে বলল
মেয়েটি: রসায়ন বিভাগ কোন দিকে
আমি: হা করে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি। একদম পরির মতো। নিল ড্রেসে নিল পরি একটা
মেয়েটি: আমার এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে একটু নার্ভাস ফিল করলো এবং চলে গেল।
আমি: (পেছন থেকে ডাক দিলাম) এই যে মিস
মেয়েটি: কি
আমি: দাড়ান
মেয়েটি: বলেন
আমি: চলেন যায়
মেয়েটি: কোথায় যাবো
আমি: রসায়ন বিভাগে
মেয়েটি: আপনার সাথে কেন যাবো
আমি: আমিও এইবার নতুন ভর্তি হয়েছি রসায়ন বিভাগে।
মেয়েটি: আচ্ছা চলেন।

তারপর মেয়েটির সাথে একটু আধটু কথা হলো। মেয়েটির নাম ই তো জানা হলো না। দুররর। মেয়েটির গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। এখানে মেসে থাকবে হয়ত।
যায় হোক আমি প্রথম দেখায় প্রেমে পড়েছিলাম। পরের দিন আমি ভার্সিটিতে গিয়ে অপেক্ষা করছি আমার নিল পরির জন্য। 

লক্ষ করলাম গেট দিয়ে ঢুকছে। আমার সামনে দিয়ে চলে যেতে লাগছিল।
আমি: এই যে নিল পরি
মেয়েটি: আমাকে বলছেন
আমি: হুমম। চলেন একসাথে যায়(তারপর দুজন একসাথে হাটসি)
মেয়েটি: আচ্ছা আমাকে পরি বললেন কেন
আমি: আপনি পরির মতো সুন্দর তাই
মেয়েটি: আমি সুন্দর না আপনার চোখটায় ভিন্ন
আমি: হয়ত। আচ্ছা আপনার নামটাই তো জানা হলো না
মেয়েটি: প্রেরনা। আপনার
আমি: রুপম।

তারপর ক্লাসে গিয়ে আর কথা হয় নি। পরের দিন একটু লেট হয়ে গেল গিয়ে দেখি প্রেরনা আগেই চলে এসেছে। মনে হচ্ছে চিন্তায় আছে।
আমি: কেমন আছেন
প্রেরনা: ভালোই। আপনি
আমি: ভালো। আপনাকে চিন্তিত মনে হচ্চে
প্রেরনা: হুমম। মানে মেস নিয়ে চিন্তায় আছি। কোথায় উঠবো। কোথায় উঠলে ভালো হবে।

ভাবলাম আমাদের বাসার নিচ তালায় রুম খালি আছে প্রেরনা যদি ওখানে উঠে আমার ভালোই হবে। আম্মুকে বলে আমি ব্যবস্থা করে দিব।

আমি: আচ্ছা আপনি আমাদের বাসায় থাকতে পারেন খালি আছে নিচের তালায়। দুজন থাকা যাবে। 
প্রেরনা: আচ্ছা দেখি।
আমি: আপনার কোন সমস্যা হবে না আমাদের বাসায়। রান্না করতে পারেন ই তো।
প্রেরনা: হুমম পারি।
আমি: তাহলে কালকেই আসুন আমি আম্মুকে বলে দিব
প্রেরনা: কিন্ত ভাড়া
আমি: সমস্যা নেই আপনি আমার ফ্রেন্ড। মেসে থাকলে যা লাগত তাই ই দিবেন।
প্রেরনা: আচ্ছা আপনাকে ধন্যবাদ।
আমি: ধন্যবাদ লাগবে না বন্ধু তো আমরা
প্রেরনা: হুমম
আমি: কালকে তাহলে চলে আসেন।
প্রেরনা: আচ্ছা আপনার নং. টা দেন যোগাযোগ করে আসবো কালকে।
আমি: হুমম ০১৭........

তারপর দিন থেকে প্রেরনা আমাদের বাসার নিচ তালায় আর আমি ওপর তালায় থাকতাম। প্রেরনা আর ওর বান্ধবি স্মৃতি থাকে। এখন প্রেরনার সাথে আমার খুব ভালো বন্ধুত্ব। আমাদের সম্পর্কটা এখন আপনি থেকে তুই তে চলে এসেছে।

প্রতিদিন আমি প্রেরনা আর স্মৃতি একসাথে ভার্সিটি যায়। একসাথে ঘুরি আর গল্প করি। আবার একসাথে বাসায় আসি।

একদিন সকাল বেলা ঘুমিয়ে আছি। হঠাৎ কে যেন আমার গায়ে পানি ঢেলে দিলো।
আমি: কোন শালা রে
প্রেরনা: (কান চেপে ধরে) ঐ আমি তোর শালা
আমি: নাহহ। আসলে ঘুমের ঘোরে বলে ফেলেছি। কান ছাড়
প্রেরনা: কয়টা বাজে দেখেছিস তুই এখনো ঘুম পাড়িস। রাতে কি করিস
আমি: যা করি করি। তাই বলে তুই আমাকে ভিজিয়ে দিবি।
প্রেরনা: বেশ করেছি
আমি: দাড়া
প্রেরনা: দৌড় দিতে লাগল
আমি: ঝাপটে ধরলাম
প্রেরনা: ছাড় বলছি ছাড়
আমি: ভিলেনি হাসি দিলাম

তারপর প্রেরনাকে বাথরুমে ঢুকিয়ে একবারে গোসল করিয়ে দিয়েছি।হিহি।
আমি: যা গোসল করিয়ে দিলাম ভার্সিটি যেতে হবে গোসল তো করতেই হতো।
প্রেরনা: শয়তান, কুত্তা। তারপর নিচে চলে গেল।

এভাবে চলতো আমাদের দিনগুলো। একদিন প্রেরনাকে না দেখলে থাকতে পারতাম না। রাতে আমি প্রেরনা আর স্মৃতি ছাদে বসে গল্প করতাম। কোনদিন খেলতাম।
একদিন প্রেরনাকে বলছি
আমি: কি রে এতোদিন হয়ে গেল একদিন ও তো তোদের রুমে আমাকে ডাকলি না।
প্রেরনা: কেন ডাকব তোকে
আমি: খায়তে যাবো আজ তোর হাতের রান্না। তুই নাকি রান্না করতে পারিস। 
প্রেরনা: আচ্ছা আসিস

দুপুর বেলা গেলাম ওদের রুমে। গিয়ে ভালো করে খেলাম। প্রেরনা ভালোই রান্না করে তবে আম্মু আরো ভালো। আমার একটা অভ্যাস হলো কোন কিছু খাওয়া শেষে প্রেরনার উড়নায় মুছে দেয় হাত
আজও মুছেছি। প্রেরনা রাগি লুক নিয়ে দু একটা মাইর দেয়। এখন প্রেরনা মাঝে আমাকে ডাকে খাওয়ার জন্য। আমিও খায়। আবার আম্মুর সাথেও ওদের ভালো ভাব। মাঝে মাঝে আম্মু ওদের খাওয়ায়।
.
আস্তে আস্তে প্রেরনার প্রতি আমি পুরোপুরি দুর্বল হয়ে পড়ি। একদিন ভার্সিটিতে 
প্রেরনা: রুপ।( প্রেরনা আমাকে রুপ বলেই ডাকে)
আমি: কি
প্রেরনা: রিক্ত আমাকে আজ প্রপোজ করছে
আমি: ওহহ।( মন খারাপ হয়ে গেল)
প্রেরনা: স্মৃতি বলছে যে হ্যা বলে দিতে ছেলেটা দেখতে ভালো তাই। আমি না করে দিছি।
আমি: নাহহ করায় ভালো
প্রেরনা: কেন
আমি: এসব ভালো না
প্রেরনা: হুমম। চল বাসায় যায়
আমি: হুমম চল।

বাসায় এসে ভাবছি প্রেরনাকে বলে দিব যে ওকে ভালবাসি। কিন্তু ও যদি আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আবার যদি আমার আগেই ও অন্য কারো হয়ে যায়।

একদিন আমরা সবাই ঝাল মুড়ি খাচ্ছি। খাওয়া শেষে আমি প্রেরনার উড়নায় হাত মুছে দিলাম। প্রেরনা রেগে গেলে।
প্রেরনা: শয়তান। তুই বার বার আমার উড়নাতে কেন হাত মুছিস 
আমি: আমার ইচ্ছা তাই
প্রেরনা: খালি পারিস মুছতে কোনদিন তো একটা উড়না কিনে দিস না
আমি: একটা কেন পুরো মার্টেকের উড়না তোকে দিয়ে দিলাম। যা নিয়ে নিস।
প্রেরনা: রেগে গিয়ে দু একটা মাইর দিলো।

পরের দিন বাজারে গিয়ে একটা লাল উড়না কিনলাম আর একটা মার্কার পেন।
বাসায় এসে উড়নার ওপর মার্কারি দিয়ে বড় করে লিখে দিলাম আমি তোকে ভালোবাসি প্রেরনা
উড়নাটা প্রেরনাকে দিয়ে দিলাম আর বললাম বাসায় গিয়ে খুলে দেখবি। আর কালকে পড়ে আসবি।

আজ রাতে প্রেরনা ছাদে আসলো না। আমি ফোন দিলেও ধরছে না। তাহলে কি ও আমার প্রপোজ করার কারনে এমন করছে। পরের দিন ভার্সিটিতেও আসে নি। আমি তো পাগল হয়ে গেছি তিন দিন প্রেরনা ভার্সিটি যায় নি। কল রিসিভ করছে না। ওকে একদিন না দেখলে আমি থাকতে পারি না।

তিন দিন পরে ৪র্থ দিন প্রেরনা আসলো। দুরর থেকে লক্ষ করলাম আমার দেওয়া উড়না টা পরে আসে নি। তাহলে কি প্রেরনাও আমাকে ভারোবাসে না। মনটা খারাপ হয়ে গেল।
আমি: কি রে এই তিন দিন আসিস নি কেন
প্রেরনা: সেটা তুই ভালো করে জানিস
আমি: আমার কল রিসিভ করিস নি কেন
প্রেরনা: তোর কারনেই।
আমি: সরি রে আমাদের বন্ধুত্ব টা নষ্ঠ করিস না
প্রেরনা: নাহহ আমি আর আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না। তুই আর আমার সাথে কথা বলবি না। এই নে তোর উড়না।( চলে গেল সামনে থেকে)

আমি কি করব ভেবে পাচ্ছি না। বাসায় চলে গেলাম। 
আমি কয়েকদিনে পাগলের মতো হয়ে গেছি। ঠিক মতো খায় না ঘুমায় না। ভার্সিটিতে যায় না।

একদিন রাত দশটা বাজে শুয়ে শুয়ে প্রেরনার কথা ভাবছি। হঠাৎ ফোনে মেসেজ আসলো প্রেরনার নং. থেকে " পেকেট টা খুলে দেখ গাধা"।
আমি পেকেট খুলে তো অবাক। উড়নার অপর পাশে মার্কারি দিয়ে লেখা "আমিও তোকে ভালোবাসি রুপ"।
আমি দৌড়ে ছাদে গেলাম কারন আমরা এই সময় ছাদে বসে গল্প করতাম।

আমি পেছন থেকে গিয়ে প্রেরনাকে জড়িয়ে ধরলাম ও ভয় পেয়ে গেল কিন্তু যখন দেখলো আমি আর কিছু বলল না।
প্রেরনা: এতো দিন পরে আমাকে মনে পড়লো তোর
আমি: প্রতি মুহূর্তে তোকে মিস করেছি। কিন্তু তুই তো বলেছিস তোর সাথে যেন কথা না বলি তাই তো আসি নি তোর সামনে
প্রেরনা: গাধা তুই যে পেকেট টা খুলবি না আমি কি জানতাম তা না হলে তোকে কষ্ট দিতাম না
আমি: এতোদিন আমাকে তোর মনে পড়ে নি।
প্রেরনা: হুমম প্রতিদিন ছাদে ভার্সিটিতে খুজেছি তোকে পায় নি।
আমি: সরাসরি বললেই তো পারতি ভালোবাসিস
প্রেরনা: সারপ্রাইজ দিব ভাবছিলাম কিন্তু তুই একটা গাধা।
আমি: এখন একটা পাপ্পি দে না।
প্রেরনা: আগে প্রপোজ কর।
আমি: করছি একবার
প্রেরনা: আবার কর
আমি: ভাবছি কি দিয়ে করব ছাদের ওপর টবে গোলাপ গাছ থেকে আধফোটা গোলাপ টা তুলে প্রেরনার সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়লাম

" তোর হাত ধরে জিবনের সবটুকু পথ হাটতে চায়। তোর ইচ্ছাগুলো নিজের মধ্যে পোষন করতে চায়। তোর সাথে চলব যতদিন বাচঁব। তুই আমার অবকাশ নয় অভ্যাসে পরিনিত হয়ে গেছিস। তুই আমার সূচনীয় ও ঐন্তিম ভালোবাসা হবি?"

ফুল টা হাতে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো
প্রেরনা: হুমম পাগল হবো। আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি। আর একটা পাপ্পি।

ভালোই চলছিল আমাদের। রাতভর গল্প করা। সারাদিন ঘুরে বেড়ানো। প্রেরনার মিষ্টি শাসন। আমার আম্মু আমাদের সম্পর্ক টা নিয়ে কিছুটা আচ করতে পেরেছিল। আমি আম্মুকে সরাসরি বলে দিই যে আমি ওকে ভালোবাসি। আম্মু রাজি ছিল প্রেরনাকে বউ বানাতে। খুব আদর করত ওকে। 

একদিন আমি চট্টগ্রাম আমার ফুপুর বাসায় যায়। তিন দিন পর বাসায় এসে দেখি সব এলোমেলো হয়ে গেছে। প্রেরনারা আমাদের বাসা ছেড়ে চলে গেছে। ভার্সিটিতে খোজ নিলাম কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না। স্মৃতি ও জানে না প্রেরনা কোথায় গেছে। ফোন বন্ধ। আমি টেনশনে পড়ে গেলাম। সেই যে গেল প্রেরনা আর ফিরে এলো না। তিন বছর দেখা কথা কিছুই হয় নি। আম্মুর কাছে আমার দেওয়া সেই উড়নাটা ফেরত দিয়ে গেছে।

আজ তিন বছর পর প্রেরনার সাথে দেখা। ও কি বিয়ে করে ফেলেছে ভয় হচ্ছে। কিন্তু ও কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেছিলো আজ জানতেই হবে। 
আমাকে দেখে প্রেরনার চলে যেতে লাগল
আমি ডাক দিলাম শুনল না।
পেছন থেকে গিয়ে হাত চেপে ধরলাম।
আমি: প্রেরনা তোর সাথে কথা আছে দাড়া
প্রেরনা: আমার নেই। তুই হাত ছাড় না হলে কিন্তু ভালো হবে না।
আমি: ছাড়ব না
প্রেরনা: ঠাসসসসস। ( সবাই তাকিয়ে আছে)
আমি: হাত ছেড়ে দিলাম প্রেরনা চলে গেল। ভিড়ের মাঝে কোথায় যেন হারিয়ে গেল।

পেছন থেকে কে যেন কাধে হাত রাখলো। আমি ঘুরে দেখি স্মৃতি। 
আমি: দেখলি প্রেরনা আজ আমাকে চড় মারলো তাও এতোগুলো মানুষের সামনে
স্মৃতি: তোর ওপর ওর ঘৃনা জমে আছে রে।
আমি: কেন
স্মৃতি: প্রেরনা কেন তোকে ছেড়ে চলে গেছিলো আমি জানি
আমি: কিহহ এতোদিন কেন বলিস নি
স্মৃতি: প্রেরনা বলতে নিষেধ করেছিল
আমি: আজ তোকে বলতেই হবে
স্মৃতি: হুমম বলব চল ওদিকে।
স্মৃতি আর আমি এক জায়গায় গিয়ে বসলাম।
আমি: এইবার বল।

প্রেরনা: তুই যখন তোর ফুফুর বাসায় গিয়েছিলি। তোর বাবা তোকে প্ল্যান করে তোর ফুফুর বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিল।তোর বাবা তোদের রিলেশনের ব্যাপারে আগেই হয়ত বুঝতে পারছিল। তুই ফুফুর বাসায় যাওয়ার পর তোর বাবা প্রেরনাকে ডেকে অনেক খারাপ খারাপ কথা বলে। চরিত্র নিয়ে অপমান করে। আরো বলে তোর সামনে যেন আর না আসে। তুই নাকি ওর সাথে টাইমপাস করেছিস। তুই নাকি তোর বাবাকে এগুলো বলতে বলেছিস প্রেরনাকে। তোর বাবা সেদিন খুব খারাপ খারাপ কথা বলে প্রেরণা কে। খুব কষ্ট পেয়েছিল ও সাথে মানসিক আঘাত। তাই ও সিধান্ত নেই আর রাজশাহীতে থাকবে না। সেদিন ই গ্রামের বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার পথে ওর ফোন টা চুরি হয়ে যায়। পরে নতুন ফোন কিনে আমাকে ফোন দেয় এবং তোকে নং. দিতে নিষেধ করে। আর এসব বলতেও নিষেধ করে।

আমি: (চোখ দিয়ে কখন যে পানি ঝরছে বুঝতে পারি নি) প্রেরনা এখন কি বিবাহিত?
স্মৃতি: হুমম। কিন্তু
আমি: কিন্তু কি
স্মৃতি: ওর স্বামী মারা গেছে
আমি: কিভাবে।

স্মৃতি: ও বাসায় যাওয়ার পর ওর বিয়ে ঠিক হয়। ও রাজি হয়ে তোর বাবার কারনে। বিয়েটাও হয় কিন্তু বিয়ে করে ওকে নিয়ে যাওয়ার পথে রোড এক্সিডেন্ট এ ওর স্বামী সহ আরো অনেকে মারা যায়। ভাগ্যক্রমে ও বেচে যায়। এসব ঘটনা শুনে প্রেরনার বাবা স্টোক করে মারা যায়।
আমি: এখন প্রেরনা কোথায়
স্মৃতি: ওর মাকে নিয়ে রাজশাহিতেই থাকে। আর একটা জব করে।
আমি: প্রেরনার তো কোন দোষ নেই আমাকে ভালোবাসেছিল। ওর সাথে এমন হওয়ার কথা ছিল না তো। আমার বউ ই তো হওয়ার কথা ছিল।
আমি স্মৃতির থেকে প্রেরনার ঠিকানা টা নিলাম

চলে আসলাম প্রেরনার বাসায়। কলিং বেল দিলাম। একজন বয়স্ক মহিলা খুলে দিলেন। প্রেরনার মা হবে হয়ত
আমি: আন্টি প্রেরনা আছে
আন্টি: নাহহ। তুমি কে বাবা
আমি: আমি প্রেরনার বন্ধু
আন্টি: ওহ ভেতরে আসো প্রেরনা একটু পরেই আসবে বসো একটু।
আমি: আচ্ছা। আন্টি একটা কথা বলার ছিল
আন্টি: বলো
আমি: আমি প্রেরনাকে বিয়ে করতে চায়
আন্টি: তুমি হয়ত জানো না
আমি: জানি সব জানি। তারপর আমাদের মাঝে ঘটে যাওয়া সব কিছু খুলে বললাম 
আন্টি: আমার কোন আপত্তি নেই যদি প্রেরণা রাজি থাকে
আমি: রাজি হয়ত হবে না এখন

কিছুক্ষন পর প্রেরনা আসলো
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হয়ত ভাবছে আমি কিভাবে ওর ঠিকানা পেলাম।
আমি: কেমন আছিস প্রেরনা
প্রেরনা: সেটা আপনাকে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
আমি: আমাকে আপনি করে বলছিস কেন
প্রেরনা: অপরিচিত জন কে আমি আপনি বলি।
আমি: প্রেরনা আমি স্মৃতির কাছে সব শুনেছি। বাবার হয়ে আমি ক্ষমা চাচ্ছি ক্ষমা করে দে প্লিজ
প্রেরনা: আপনাদের মতো মানুষ কে ক্ষমা করার যোগ্যতা আমাদের নেই।
আমি: আমি তোকে বিয়ে করতে চায়
প্রেরনা: আমি করব না
আমি: তুই না আমাকে ভালোবাসিস
প্রেরনা: আমি কাউকে ভালোবাসি না। আপনার কথা শেষ হলে আপনি আসতে পারেন।
.
চলে আসলাম। আমি জানি প্রেরনা আমাকে এখনো ভারোবাসে কিন্তু স্বীকার করছে না। কি করব কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।
স্মৃতি কে ফোন দিয়ে বললাম প্রেরনাকে বলতে যে আমি ঘুমের ঔষুধ খেয়ে এখন হাসপাতাল এ আছি।

স্মৃতি ফোন করে প্রেরনাকে বলল প্রেরনা হাসপাতালে চলে আসলো। কিন্তু আমি তো ঔষুধ খায় ই নি। একটু অভিনয় করছিলাম।
প্রেরনা: আমার পাশে বসে কান্না করতেছে।
আমি: ওর হাত চেপে ধরলাম
প্রেরনা: আমার দিকে তাকালো
আমি: কি রে তুই নাকি আমাকে ভালোবাসিস না তাহলে কেন এসেছিস
প্রেরনা: তুই ঘুমের ঔষুধ খাস নি
আমি: নাহহ। এমনি নাটক করলাম
প্রেরনা: উঠে চলে যেতে লাগল
আমি: যা এইবার কিন্তু সত্যি খাব। আর আমাকে পাবি না।
প্রেরনা: ঘুরে এসে মাইর শুরু করে দিলো। কুত্তা শয়তান 

তারপর সবাই আসলো আম্মু আব্বু প্রেরনার আম্মু স্মৃতি।
বাবা: প্রেরনা মা আমাকে ক্ষমা করে দেও। (হাত জোর করে)
প্রেরনা: না আঙ্কেল আপনি আমার বড়ো।
বাবা: আঙ্কেল না বাবা বলো
প্রেরনা: লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিলো।

সেদিনই আমাদের বিয়ে হয়ে গেল। অনেক কষ্টের পরে হলেও ভালোবাসার জয় হয়। এটাই সত্যিকারের ভালোবাসা। কাউকে সত্যি সত্যি যদি ভালোবাসেন আপনি তাকে পাবেন ই একদিন। ভরসা রাখুন আপনার ভালোবাসায়।
----------সমাপ্ত------------
www.NetPriyo.Ooo

No comments:

Post a Comment