Saturday, September 1, 2018

দোস্ত তুই এত সুন্দরী কেন??? Bangla Romantic Love Story






দোস্ত তুই এত সুন্দরী কেন?
-তুই যে কি বলিস আমি তো
পেত্নি।
-না রে তুই সত্যিই সুন্দরী।আর শুধু
সুন্দরীই
নয় ককটেল সুন্দরী।
-ধ্যাত তুই যে কি বলিস না।
-আচ্ছা দোস্ত।
-হুম।
-একটা কথা বলব?
-হুম বল।
-আমি যদি একটা পরীর কাছে একটু
ভালবাসা ভিক্ষা চাই সে কি
দিবে
আমায়।
-দিবে কি না জানিনা তবে তুই
ট্রাই
করতে পারিস।
-অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা
করেছি
কিন্তু লাভ হয়নি রে।
-এই ফাজিল মেয়েটা কে রে, আর
কবে
থেকে চলছে এসব।
-তুই যে কি চলিস না চালাতে আর
পারলাম কোথায় বলতো এখনও
তাকে
জানাতেই পারলাম না।
-হুম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বলে ফেল।
-বলতে তো চাই কিন্তু যদি সে
ফিরিয়ে দেয়?
-আরে নাহ তোর মত একটা কিউট
ছেলেকে কেউ ফিরিয়ে দিতে
পারে।
-তবুও যদি সে বন্ধুত্বটাই নষ্ট করে
দেয়।
-শুভ্র সত্যি করে বলতো মেয়েটা
কে?
-তুই।
-দেখ শুভ্র সবসময় ফান করবি না।
-আমি সিরিয়াসলি বলছি
রাত্রি,প্রথম
দিন থেকেই তোকে ভালবেসে
ফেলেছি।জানি আমার প্রতি তোর
কোন ফিলিংসই নেই তবুও একটিবার
সুযোগ দে আমায়।আমি তুই ছাড়া
থাকতে পারব না রে।
-ছি ছি শুভ্র তোর কাছ থেকে অন্তত
আমি এটা আশা করিনি।
-প্লিজ রাত্রি বোঝার চেষ্টা কর
ভালবাসাটা কোন অপরাধ নয়।
-আমি ভাবতেই পারছি না
শুভ্র,আমরা
শুধু ভাল বন্ধু তাই ছাড়া কিছু নয়।
-কিন্তু আমি তো তোকে অনেক
কিছু
ভাবি।
-সেটা তোর ভুল।
-আমি পারব না তোকে ছাড়া
বাচতে।
-শুভ্র তুই ভুল করছিস প্লিজ ভুলে যা।
-রাত্রি আমি ভিক্ষা চাইছি তোর
কাছে একটু ভালবাসা।(শুভ্র রাত্রির
হাত চেপে ধরেছে)
-শুভ্র ছাড় আমাকে বলছি।
-না আগে বল ভালবাসবি।
-কি ছেলে মানুষি করছিস সবাই
দেখছে তো।
-দেখুক আমার কি তাতে।
-শুভ্র হাত ছাড়।
-আগে বল ভালবাসিস।
ঠাশ.........।কিছুক্ষন নীরব দুজন।
-রাত্রি একটা কার্ড এগিয়ে দিল
শুভ্রর
দিকে।
-কি এটা?
-আমার বিয়ের কার্ড ছয়দিন পর
আমার
বিয়ে আর সেইজন্য তোকে
ইনভাইটেশন
কার্ড দিতে এসেছিলাম।
- সত্যি দোস্ত তোর বিয়ে।আগে
বলিস
নি কেন?(আড়ালে দুচোখের পানি
মুছে মুখে হাসিফোটাল শুভ্র)
-বলতেই তো এসেছিলাম কিন্তু তুই
যা
শুরু করলি তাতে বলা হল না।
-উফফ কতদিন যে দাওয়াত খাই না
দোস্ত।আমাকে কিন্তু স্পেশাল কিছু
দিবি।
-মানে?
-তোদের বিবাহিত জীবন সুখী
হোক।
-তাহলে এতক্ষন এ কথা বললি কেন?
-আরে ওইটা ফান ছিল রে পাগলী
মেয়ে।
-তাহলে আমি যে তোকে মেরেছি
তুই
তো শুধু শুধু ব্যাথা পেলি।
-আরে না।সুন্দরীদের হাতে থাপ্পড়
খেলে মিষ্টি লাগে।
-তুই না।এদিকে আয় তো মুখটা
দেখি।
-না না থাক তোর জামাই যদি
জানতে
পারে তুই আমার মুখে হাত
লাগিয়েছিস সে তো সুইসাইড
খাবে
হি হি হি।
-শুভ্র তুই এত ফাজিল কেন?
-হয়ত তোর জন্য।
-চল তাহলে।
-কোথায়?
-বাহ শুধু অভিনন্দন জানালে হবে
কিছু
খাওয়াবি না।
-হুম চল।
সারা বিকেল রাত্রির সাথে ঘুরে
ওকে বাসায় পৌছে দিয়ে এসেছে
শুভ্র।পাশাপাশি না তবুও অনেকটা
কাছেই ওদের দুজনের বাসা।সেই
ইন্টারমিডিয়েট থেকে দুজনের
চেনা
জানা বন্ধুত্ব।
শুভ্র রাত্রিকে পছন্দ করে অনেক
আগে
থেকে।কিন্তু বলার সুযোগ পায়নি।
শুভ্র
জানত ওকে ফিরিয়ে দিবে কিন্তু
তারপরেও কষ্ট হল যখন শুনল রাত্রির
বিয়ে ঠিক হয়েছে।
রাত ১২টা শুভ্র হালকা আলোয় প্রিয়
ডায়েরীর একটা পাতায় কিছু
লিখছে।
চোখ থেকে পানি ঝরছে। পাশে
চিকচিক করছে একটা নুপুর।
হ্যা এই সেই নুপুর যা একদিন রাত্রির
অজান্তেই শুভ্র নিয়েছিল নুপুরটি।
সেই
থেকে নিজের কাছে রেখেছে।যখন
খুব মনে পড়ে তখন নুপুরটার দিকে
তাকিয়ে থাকে অপলক।আজও
তাকিয়ে
আছে।
আচ্ছা রাত্রি কেন বোঝেনা ওকে
আমি সত্যি সত্যি ভালবাসি।আমি
শুধু
ওর পাশে হাতটি ধরে সারাজীবন
চলতে চাই।একটিবার আমাকে কেন
ভালবাসতে দিল না।তবু ও আমি
ভালবাসব এই মেয়েটাকে।
পরেরদিন সকালে,
-দোস্ত তুই কই?(রাত্রি)
-এই তো বাসায়।
-একটু আসতে পারবি?
-কোথায়?
-শপিং এ যাব।
-কিন্তু........
-কোন কিন্তু নয় তুই যাচ্ছিস।
-রাত্রি শোন না।
-না কিছুই বলবি না তুই।(ফোনটা
রেখে
দিল রাত্রি)
শুভ্র আধাঘন্টা পর বাথরুমে ফ্রেস
হতে
ঢুকল।কিছুক্ষন পর বের হতেই চমকে উঠল।
তার প্রিয় জিনিসটা হাতে নিয়ে
কেউ একজন দাড়িয়ে।তাড়াতাড়ি
করে ডায়েরীটা রাত্রির হাত
থেতে
নিয়ে নিল শুভ্র।
-কি রে কতক্ষন এসেছিস?(স্বাভাব
িকভাবে প্রশ্ন করল শুভ্র)
-এই তো মাত্র এসেছি তোর দেরি
হচ্ছে দেখে।
-ও।তুই বস আমি কফি নিয়ে আসি।
-শুভ্র শোন।
-হ্যা বল।
-এটা কোথায় পেয়েছিস তুই?(নুপুরটি
দেখিয়ে)
-আরে ওটা তুই পেয়েছিস কোথায়?
দে
আমাকে দে।
-না আগে বল এটা কার?
-জেনে কি করবি তুই?
-করব অনেক কিছু।
-আমি জানিনা ওটা কার।
-শুভ্র সত্যিটা বল।
-আরে তুই এত সিরিয়াস হচ্ছিস কেন
আজিব।
-কারন এই নুপুরটা আমার।
-তুই কি পাগল হয়েছিস নাকি।তোর
নুপুর
আমি রাখতে যাব কেন।
-শুভ্র চালাকি করবি না।আমি তোর
ডায়েরী পড়েছি।
-আরে ওটা আমার নয়।(হি হি হি)
ঠাশ.......
-তুই এত বেহায়া কেন?
-জানি না।
-এত ভালবাসিস কেন আমায়।আমি
তো
তোর ভালবাসার মূল্য দিতে
পারবনা।
-আরে পাগলী ভালবাসি আমি
বাসি
তুই তো না।তুই এত কষ্ট পাচ্ছিস কেন?
-তুই সত্যিই একটা....
-একটা কি?
-গাধা।
-হুম তুই গাধী..না আমার না তোর
জামাইয়ের।
-পাগল।চল দেরি হয়ে যাচ্ছে।
-হুম চল।
বেরিয়ে পড়ল দুজন।সারাদিন শপিং
করেছে।মাঝে মাঝে যখন শুভ্রের
স্পর্শ
লাগছিল রাত্রি অবাক হয়ে
তাকিয়ে
দেখছিল শুভ্রকে।
শপিং শেষে বাসায় পৌছে দিয়ে
আসার সময় অপলক তাকিয়ে ছিল
রাত্রি।
দেখতে দেখতে কেটে গেল
দিনগুলো।
এ কদিনে
এক অন্যরকমভাবে খুঁজে পেয়েছে
দুজন
দুজনকে।অনেকটা ঘনিষ্টতার সৃষ্টি
হয়েছে।
সেই সকাল থেকেই শুভ্রর ফোন অফ।
রাত্রি বারবার ট্রাই করছে,একটু পর
সে
অন্যকারো হয়ে যাবে।রাত্রি তো
তাই
চেয়েছিল কিন্তু এখন কেন জানি
এক
গভীর শূন্যতা অনুভব করছে সে।শুভ্রকে
মিস করছে সে,কিন্তু চাইলেই যে
আজ
এক দৌড়ে দোস্তর বাসায় আসতে
পারবে না সে।তাই নিরুপায় হতাশ
একজোড়া চোখ নীরবে অশ্রু
ঝরাচ্ছে।
........
এখন সন্ধ্যা নেমেছে।শুভ্র দার
বেডরুমে
শুয়ে আছে।পুরানো কিছু স্মৃতির
জালে
আজ সে বিদ্ধ।চিৎকার করে বলতে
ইচ্ছে
করছে সেই না বলা কথাগুলো....
মৃদুস্বরে গান বাজছে,
তুমি আর তো কারো নও শুধু আমার,
যতদূরে সরে যাও রবে আমার,
স্তব্ধ সময়টাকে ধরে রেখে,
স্মৃতির পাতায় শুধু তুমি আমার,
কেন আজ এত একা আমি,
আলো হয়ে দূরে তুমি,
আলো আলো আমি কখনও খুঁজে পাব
না,
চাঁদের আলো তুমি কখনও আমার হবে
না,
হবে না হবে না হবে না......
হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজ হল।
অন্ধকারে আবছায়া একটি
নারীমূর্তি
ভিতরে প্রবেশ করল।শুভ্র উঠতে
গিয়েও
পারলনা।কেউ একজন চেপে ধরল
কলারটা।
-এ কি তুই এখানে কেন?একটু পর না
তোর
বিয়ে।
-চুপ বেয়াদব।প্রেমের ফাঁদে ফেলে
এখন
দেবদাস সাজা হচ্ছে।
-মানে?
-মানে তোকে বুঝতে হবে না।তুই
কি
ভেবেছিস আমি হেরে যাব।কখনো
না,আমি পারব না তোকে ছাড়া
থাকতে।
-এই পাগলী মেয়ে তুই ঠিক আছিস।
-হ্যা আমি ঠিক আছি শুধু তুই ঠিক
নেই।
(কেঁদে কেঁদে)
-আমার আকার কি হল?
-একেবারে ন্যাকামি করবি না।এত
যখন
ভালবাসিস আমায় আমাকে নিয়ে
চলে গেলি না কেন।
-তুই একটা পাগলী।
-হ্যা আমি পাগলী,শুধু তোরই পাগলী।
-চল বাসায় পৌছে দিয়ে আসি।
-না এখন থেকে এটা আমার বাসা।
(আরও
জোরে কেঁদে উঠল)
-রাত্রি ছেলেমানুষি করিস না।
-শুভ্র আমি হয়ত কোন একদিন তোকে
ফিরিয়ে দিয়েছি,বিশ্বাস কর তখন
আমি ভালবাসা বুঝতাম না।এখনও
বুঝিনা।কিন্তু বিশ্বাস কর তোকে
ছেড়ে থাকতে পারব না।তুই
আমাকে
ভালবাসা শিখাবি না।
-পাগলী মেয়ে একটু পর যার বিয়ে
সে
এখন অন্য একজনকে ভালবাসা
শিখাতে
বলছে।মানুষে শুনরে কি বলবে।
-যা বলে বলুক আমার স্বামীর কাছ
থেকে আমি ভালবাসা শিখব
তাতে
মানুষের ক্ষতি কি।
-তুই যাবি।
এবার রাত্রি কেঁদে উঠে জড়িয়ে
ধরল
শুভ্রকে।
-এই ছাড় বলছি।(শুভ্র)
-না আগে বল ভালবাসি।
-না বলব না।
-তাহলে ছাড়ব না।
-রাত্রি ছাড় না।
-না বল ভালবাসি।
-কিন্তু তুই তো আমাকে ভালবাসিস
না।
-কে বলেছে?
-তুই তো বলেছিলি সেদিন।
-তখন বুঝতাম না কিন্তু এখন বুঝি।
-হুম।ভালবাসি তোমায় আমার
ককটেল
সুন্দরী।
-কি বললি আমায়।
-নাহ কিছুনা।
-হুম আমি ও ভালবাসি তোমায়।
-এবার ছাড়।
-হুম।
-এই পাগল তুমি কাদছ কেন?
-জানি না পাগলী।
-তাহলে দাও...
-কি
-নুপুর পরিয়ে....আমি জানি ওটা
আমার।
-হুম।
অতপর নতুন একটা সম্পর্কের শুভ সূচনা।
ভালবেসে বন্ধনে জড়িয়ে
রেখেছে
একে অপরকে।।

No comments:

Post a Comment